টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন
কিওয়ার্ড ইনটেন্ট কি - কিওয়ার্ড ইনটেন্ট কত প্রকার ও কি কি । বিস্তারিত জানুনটু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে আজকে এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি। আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে জেনে নিন টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশ এর অসুবিধা অসুবিধা।
সাথে আরো আলোচনা করতে যাচ্ছি গুগল প্রম্পট এবং ফিজিক্যাল টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
এর পার্থক্য। সুতরাং এই আর্টিকেলটি পড়ে যেনে নিন টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে
কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন।
সূচিপত্র: টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন
- টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কি
- টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের কাজের পদ্ধতি
- টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের ধরন
- টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের অসুবিধা
- গুগল একাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের গুরুত্ব
- গুগল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
- টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন
- ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
- ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করার নিয়ম
- ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বন্ধ করার নিয়ম
- ইউটিউব টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
- টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড না আসলে কি করবো
- টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কেন গুরুত্বপূর্ণ
- টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কাদের ব্যাবহার করা উচিত নয়
- গুগল প্রম্পট এবং ফিজিক্যাল টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর পার্থক্য
- শেষ কথা
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কি
বর্তমান সময়ে যেমন ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের
বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্বও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায়
প্রতিনিয়তই সাইবার আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয় ইউজারদের।
শুধুমাত্র একটি পাসওয়ার্ড আমাদের অনলাইন জীবনের ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য
রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট নয়।
আমরা যতই জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি বা নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করি না
কেন, তা সত্ত্বেও আমাদের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকাংশই থেকে যায়। এই
সমস্যা সমাধান করতে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী
ভূমিকা পালন করতে পারে। বিগত বছরগুলিতে যেখানে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সম্পর্কে
মানুষেরা ঠিকমতো জানতোই না,
সেখানে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনেকেই গুগল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
ব্যবহার করে থাকেন। গুগলের এই সিস্টেমটি আমাদের কাছে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন হিসেবে
পরিচিত। যদিও গুগল তার ব্যবহারকারীদের জন্য টু স্টেপ অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা
বাধ্যতামূলক করেনি, কিন্তু তারা তাদের সকল সার্ভিসের ক্ষেত্রে এটি প্রচার করে
আসছে যে, টু স্টেপ অথেন্টিকেশন তাদের গ্রাহকদের গুগল একাউন্ট সিকিওর করার জন্য
কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হচ্ছে কোন ইউজার যখন অনলাইনে কোন একাউন্টে লগইন করার
জন্য তার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে, তখন দ্বিতীয় ধাপে ব্যবহারকারীর
কাছে আরেকটি কোড চাওয়া হয়, যেটি সাধারণত ব্যবহারকারীর কাছে ফোনের অ্যাপ্লিকেশন,
মেসেজ, ইমেইল, নোটিফিকেশন বা ফিজিক্যাল ডিভাইস এর মাধ্যমে পাঠানো হয়,
যা উক্ত অ্যাকাউন্টে এনরোল না করা পর্যন্ত লগইন করা যায় না। কোন একাউন্টে লগইন
করার এই বাড়তি প্রসেসকেই টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বলে। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর তথ্য ও অ্যাকাউন্ট আরও বেশি সুরক্ষিত করা যায়, কারণ
শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে কোনও সাইবার অপরাধী অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে পারে
না।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের কাজের পদ্ধতি
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন একটি একাউন্টের নিরাপত্তা সিস্টেমকে দুই স্তরে ভাগ করে
কাজ করে। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে দুটি আলাদা ধাপে
যাচাই করে একাউন্টে লগইন করার অনুমতি দেয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত
নিম্নলিখিত তিনটি উপায়ের হয়ে থাকে:
- এমন কিছু যা ব্যবহারকারী জানেন
- এমন কিছু যা ব্যবহারকারীর কাছে থাকে
- এমন কিছু যা ব্যবহারকারী নিজেই
এমন কিছু যা ব্যবহারকারী জানেন: এটি সাধারণত পাসওয়ার্ড, পিন, বা
অন্য কোনও সিকিউরিটি মাধ্যম হতে পারে। সাধারণত একজন ব্যবহারকারীকে এটির মাধ্যমে
প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে, এই ধাপে উত্তীর্ণ হলে ব্যবহারকারীকে পরবর্তী
ধাপে নিয়ে যাওয়া হয়।
এমন কিছু যা ব্যবহারকারীর কাছে থাকে: এই ধাপে ব্যবহারকারীকে একটি
ফিজিক্যাল ডিভাইস ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয় প্রমাণ করতে হয়,
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মোবাইল ফোন বা হার্ডওয়্যার টোকেন। এই ধাপে
ব্যবহারকারী তার ফোনে প্রাপ্ত ওটিপি বা হার্ডওয়্যার টোকেন ব্যবহার করে
দ্বিতীয় ধাপের অথেন্টিকেশন সম্পন্ন করেন।
এমন কিছু যা ব্যবহারকারী নিজেই: এই ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী নিজেই টু
ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকেন, যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেস
রিকগনিশন, বা আইরিস স্ক্যান ইত্যাদি।
এই তিনটি ধাপের মধ্যে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপটি সাধারণত প্রথম ধাপের চেয়ে
বেশি সুরক্ষিত হয়ে থাকে। কারণ হ্যাকারেরা শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড হ্যাক করে,
ওটিপি বা বায়োমেট্রিক তথ্য ছাড়া অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারে না।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের ধরন
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন তার
এই পর্যায়ে আমরা এখন আলোচনা করতে যাচ্ছি টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের ধরন
সম্পর্কে। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন
জীবনে কিছু প্রচলিত টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন রয়েছে সেগুলো হলো:
- এসএমএস ভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
- সফটওয়্যার টোকেন
- হার্ডওয়্যার টোকেন
- বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন
এসএমএস ভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন: বর্তমানে আমাদের দেশে
বহুল ব্যবহৃত এবং সবচেয়ে সহজ টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন পদ্ধতি হচ্ছে এসএমএস
ভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী একাউন্টে তার
ফোন নম্বর প্রদান করে, এবং সিস্টেম থেকে ব্যবহারকারীকে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম
পাসওয়ার্ড) দেওয়া হয়, যা লগইন সম্পন্ন করার জন্য একাউন্টে প্রবেশ করাতে হয়।
এই পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ হলেও, এটি পুরোপুরি নিরাপদ নয়, কারণ এসএমএস হাইজ্যাকিং
বা সিম সোয়াপিং করার মাধ্যমে হ্যাকারেরা খুব সহজেই আপনার অ্যাকাউন্টের
অ্যাকসেস নিয়ে নিতে পারে।
সফটওয়্যার টোকেন: এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ বা
সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজ করে থাকে। সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে একটি
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটি কোড জেনারেট করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, গুগল
অথেন্টিকেটর বা অথৈ অ্যাপ ব্যবহার করে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কোড
জেনারেট করা যায়। এই কোডটি সাধারণত ৩০ সেকেন্ডের জন্য কার্যকর হয়ে থাকে।
এসএমএস ভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের তুলনায় এটি আরো নিরাপদ, কারণ এটি
ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে না।
হার্ডওয়্যার টোকেন: হার্ডওয়্যার টোকেন একটি ফিজিক্যাল
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ডিভাইস যা টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার
হয়ে থাকে। এটি আকারে পেনড্রাইভের ন্যায় হয়ে থাকে এবং ব্যবহারকারী সব সময়
এটিকে সাথে রাখতে পারে। এই পদ্ধতিটি কিছুটা ব্যয়বহুল হওয়ায় সকলে এটি ব্যবহার
করতে চায় না, কিন্তু এটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের একাউন্ট কে আমরা যতটা
সিকিওর করতে পারি, তা অন্য কোন মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। হার্ডওয়্যার টোকেন
ব্যবহার করলে আমাদের একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যতক্ষণ না
হার্ডওয়্যার টোকেন টি হ্যাকারদের হাতে চলে যাচ্ছে।
বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন: বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন হলো
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য ব্যবহার
করা। এই পদ্ধতিটি অনেক নিরাপদ, কারণ বায়োমেট্রিক ডেটা যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট,
ফেস স্ক্যান বা আইরিস স্ক্যানে হ্যাকারদের দ্বারা হ্যাক করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের অসুবিধা
যদিও টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন আমাদের একাউন্টের সাইবার নিরাপত্তার জন্য একটি
গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার, তবুও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেগুলো হলো:
- ব্যবহারকারীর অসুবিধা
- ফিশিং আক্রমণ
- হার্ডওয়্যার বা ডিভাইস হারানো
ব্যবহারকারীর অসুবিধা: অনেক সময় ব্যবহারকারীদের জন্য প্রতিবার
লগইন করার সময় দুটি ধাপ পার করে লগইন করা বিরক্তিকর বা সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
যারা ইন্টারনেট বা তথ্য প্রযুক্তিতে একটু কম অভিজ্ঞ, তাদের জন্য এটি আরও বেশি
জটিল হয়ে উঠতে পারে।
ফিশিং আক্রমণ: যদিও টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ফিশিং আক্রমণ প্রতিরোধ
করতে অত্যন্ত কার্যকর, তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নত ফিশিং টুল ব্যবহার করে
দক্ষ হ্যাকারেরা ওটিপি বা অন্য অথেন্টিকেশন সিস্টেম জাল করে আপনার অ্যাকাউন্টের
অ্যাক্সেস নিয়ে নিতে পারে।
হার্ডওয়্যার বা ডিভাইস হারানো: হার্ডওয়্যার টোকেন বা মোবাইল
ডিভাইস হারিয়ে গেলে ব্যবহারকারী জন্য তার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ একদম অসম্ভব হয়ে
পড়ে বললেই চলে। যা টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের অসুবিধা গুলোর মধ্যে একটি বড়
ধরনের অসুবিধা।
গুগল একাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের গুরুত্ব
গুগলের মতো একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। এর মূল কারণ হলো সাইবার আক্রমণের হাত থেকে ব্যবহারকারীর
অ্যাকাউন্ট রক্ষা করা। গুগল একাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন দেওয়ার কিছু
গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে যেগুলো হলো:
- অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধ
- ব্যক্তিগত ডেটার সুরক্ষা
- ব্র্যান্ড ও চ্যানেলের নিরাপত্তা
অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধ: গুগল অ্যাকাউন্টের সাথে ইউটিউব
চ্যানেল কানেক্ট থাকার কারণে তাতে আমাদের অনেকের মূল্যবান কন্টেন্ট ও ডেটা
সংরক্ষিত থাকে। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করলে পাসওয়ার্ড ফাঁস বা হ্যাক
হয়ে গেলেও অতিরিক্ত অথেন্টিকেশন স্তর থাকার কারণে হ্যাকারদের পক্ষে অ্যাকাউন্ট
হ্যাক করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ব্যক্তিগত ডেটার সুরক্ষা: আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা গুগল
ড্রাইভে নিজের অনেক ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা ভিডিও গচ্ছিত রেখে থাকেন। গুগল
একাউন্ট হ্যাক হলে তার সাথে সংযুক্ত থাকা গুগল ড্রাইভে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত
ইমেইল, ছবি, ভিডিও এবং অন্যান্য তথ্য ঝুঁকির মধ্যে
থাকে। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করে এই ধরনের ব্যক্তিগত
তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
ব্র্যান্ড ও চ্যানেলের নিরাপত্তা: অনেক বড় বড় ইউটিউব চ্যানেল
ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ইউটিউব থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন
করে থাকে। যদি এই চ্যানেলগুলির অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায় তাহলে
প্রতিষ্ঠানগুলির অনেক অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি এবং তাদের ভাবমূর্তির ক্ষয়ক্ষতি
সাধিত হয়। টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করার মাধ্যমে এই ধরনের পরিস্থিতি
প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব হয়ে ওঠে।
গুগল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
সম্প্রতি গুগল একটি ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সিস্টেম চালু করেছে যা
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারী প্রত্যেকেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে
এক্ষেত্রে এটিকে এন্ড্রয়েড 7.0 বা এর চাইতে বেশি হতে হবে। এটি ফোনের
অ্যাপ্লিকেশন, মেসেজ, ইমেইল বা নোটিফিকেশন এর চাইতেও অনেক বেশি কার্যকর হবে।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন তা
সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে এর পরের ধাপগুলি অতন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে
- প্রথমে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন পেজটি ওপেন করে আপনার গুগল একাউন্টে লগইন করে নিন তারপর Get Started বাটনে চাপ দিন।
- নিচে স্ক্রল করে Add Security Key বাটনে চাপ দিন।
- এখানে আপনি আপনার গুগল একাউন্ট এর সাথে সংযুক্ত সকল অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস দেখতে পাবেন এখানে সিকিউরিটি কি হিসেবে আপনার পছন্দের ডিভাইসটি বেছে নিন তবে খেয়াল রাখবেন আপনাকে অবশ্যই আপনার পছন্দের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্লুটুথ এবং লোকেশন উভয়ই চালু রাখতে হবে।
- অতঃপর আপনার পছন্দের ডিভাইসটিকে ফিজিক্যাল সিকিউরিটি কি হিসেবে যোগ করতে এড বাটনে চাপ দিন।
- তাহলেই দেখবেন আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি আপনার গুগল একাউন্টে ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সিকিউরিটি কি হিসেবে যুক্ত হয়ে গেছে।
এখন আপনি যখন আপনার গুগল একাউন্টে লগইন করতে যাবেন, তখন আপনার অ্যান্ড্রয়েড
ডিভাইসে একটি নোটিফিকেশন প্রদর্শিত হবে। যদি আপনি সেখানে অনুমতি প্রদান করেন
তবেই কেবল আপনি আপনার গুগল একাউন্টে লগইন করতে পারবেন। আশা করছি আপনি উপরোক্ত
স্টেপগুলি ফলো করলে খুব সহজেই টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন তা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
কিভাবে ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করতে হয় এই বিষয়টি কি আপনার জানা
নেই? বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক।
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যদি আপনি কোন
ঝামেলা বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং এর ভয় ছাড়া ফেসবুক ব্যবহার করতে
চান,
তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফেসবুকে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করতে হবে। ফেসবুক এ
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করা অত্যন্ত সহজ একটি কাজ। এর জন্য আপনার বাড়তি
কোন কিছুরই প্রয়োজন নেই। আপনি এই কাজটি স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ দ্বারা খুব
সহজেই করতে পারবেন শুধু চাই একটি ইন্টারনেট কানেকশন।
ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করার নিয়ম
ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কিভাবে চালু করবেন তা নিয়ে এখন আমরা বিস্তারিত
আলোচনা করব। আপনার যদি ফেসবুক সেটিং সম্পর্কে কিছু ধারণা থেকে থাকে তাহলে আপনি
খুব সহজে এবং খুব কম সময়েই ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করতে পারবেন।
প্রথমে আপনাকে অবশ্যই আপনার স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপের ইন্টারনেট কানেকশন চালু
করে নিতে হবে। আপনি যদি স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
চালু করতে চান
তাহলে অবশ্যই আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে ফেসবুক অ্যাপটি কে আপডেট করে
নিতে হবে। আপনি যদি ল্যাপটপ অথবা পিসি থেকে ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
চালু করতে চান তাহলে আপনার ল্যাপটপের ব্রাউজারে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি লগইন
করে নিন। তারপর ফোন হোক বা ল্যাপটপ পরবর্তী স্টেপ গুলো হুবহু ফলো করুন
- সেটিং এন্ড প্রাইভেসিতে ক্লিক করে সেটিং এ প্রবেশ করুন।
- এরপর সিকিউরিটি এন্ড লগইনে চাপ দিন।
- একটু নিচে স্ক্রল ডাউন করে ইউজ টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর পাশে থাকা এডিট বাটনে ক্লিক করুন
- এরপর আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড প্রদান করুন।
- ফেসবুক পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনি যেই নাম্বারে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কোড পেতে চাচ্ছেন সেই নাম্বারটি প্রদান করুন।
- পরবর্তী ধাপে আপনার প্রদত্ত নাম্বারে ফেসবুক কর্তৃক একটি টেক্সট মেসেজ পাঠানো হবে। সেই টেক্সট ম্যাসেজে ছয় সংখ্যার একটি পিন থাকবে সেটিকে ফেসবুকে সাবমিট করতে হবে।
- সাবমিট করা শেষে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু হয়ে যাবে।
ফেসবুক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বন্ধ করার নিয়ম
ফেসবুক একাউন্ট কে হ্যাকিং এর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য খুব কার্যকরী একটি মাধ্যম
হচ্ছে ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন। যদিও এই সেটিংসটি আমাদের ফেসবুক
অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে, তবুও কিছু কিছু ইউজারের জন্য এটি
অত্যন্ত বিরক্তিকর একটি বিষয়। প্রতিবার লগইন করার সময় বাড়তি করে আরেকটা কোড
সাবমিট করা অনেকের কাছেই বিরক্তিকর একটি কাজ।
আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা হয়তোবা ইউটিউব থেকে বা কোন ওয়েবসাইট থেকে টু
ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর উপকারিতা দেখে ফেসবুকে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু
করে দিয়েছেন, কিন্তু পরবর্তীতে তা বন্ধ করার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না চিন্তার
কোন কারণ নেই এখানে দেওয়া পরবর্তী পয়েন্টগুলি যদি আপনি স্টেপ বাই স্টেপ ফলো
করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আপনি আপনার ফেসবুকের টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
বন্ধ করতে পারবেন।
- প্রথমে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি লগইন করে নিয়ে সিকিউরিটি এন্ড লগইন থেকে সেটিংক্স এ প্রবেশ করুন।
- এরপর নিচে স্ক্রল ডাউন করুন।
- ইউজ টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করুন।
- এরপর আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি প্রদান করে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বন্ধ করতে টার্ন অফ বাটনের চাপ দিন।
- ব্যাস তাহলেই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের টু ফ্যাক্টর অথেন্টিফিকেশন বন্ধ হয়ে যাবে।
- এরপর থেকে যখনই আপনি ফেসবুকে লগইন করবেন আপনার কাছে আর আর টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কোড চাইবে না।
ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু এবং বন্ধ করার পর আমাদের অনেককেই অনেক
সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের কিছু
বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন একটি খুবই
পাওয়ারফুল সিকিউরিটি সিস্টেম। এটি একটিভ করার ফলে একটি অ্যাকাউন্টের প্রকৃত
মালিকও লগইন করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
এর জন্য আপনি যদি কখনও আপনার ফেসবুকের নাম্বার চেঞ্জ করেন তাহলে সাথে সাথে
আপনাকে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনটিও চেঞ্জ করতে হবে। ফেসবুক নাম্বারের সাথে যদি
আপনি টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের নাম্বারটি চেঞ্জ না করেন, তাহলে পরবর্তীতে
লগইনের সময় অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন।
ইউটিউব টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব। আমরা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন জিনিস সম্পর্কে জানতে বা এন্টারটেইনমেন্ট
অর্জনের উদ্দেশ্যে ইউটিউব ভিডিও দেখে থাকি। আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন
যারা নিয়মিত ইউটিউবে ভিডিও শেয়ার করে থাকেন। তাদের জন্য তাদের ইউটিউব চ্যানেল
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বস্তু।
আরো পড়ুনঃ হার্টের ব্লক দূর করার সহজলভ্য ৯টি খাবার
এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু যদি হ্যাকারদের হাতে চলে যায় তাহলে তা তার
মালিকের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। তাই ইউটিউব চ্যানেল যাতে
হ্যাকারদের হাতে চলে না যায় সেজন্য ইউটিউব চ্যানেলে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
চালু রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ইউটিউব অ্যাকাউন্টগুলি সাধারণত গুগল
অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে।
গুগল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে গেলে শুধুমাত্র ইউটিউব নয়, জিমেইল, গুগল ড্রাইভসহ
আমাদের অন্যান্য আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ একাউন্ট ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এইসব
ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই গুগল একাউন্টে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
সিস্টেম চালু রাখতে হবে।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড না আসলে কি করবো
আমরা অনেকেই আমাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কে একটু বেশি সুরক্ষিত বা হ্যাকারদের হাত
থেকে রক্ষা করার জন্য টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন দিয়ে থাকি। যা আসলে অনেকাংশেই
আমাদের ফেসবুক একাউন্ট কে হ্যাক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে, কিন্তু প্রবলেমটা
দাঁড়ায় তখন যখন আমরা আমাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন করার জন্য নাম্বার
পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন বাটনে ক্লিক করি,
কিন্তু টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে আমাদের নিকট কোন কোড আসে না। এই সমস্যা
টা প্রায় আমাদের সকলেরই হয়ে থাকে। কারো ক্ষেত্রে খুব বেশি আবার কারো ক্ষেত্রে
কিছুটা কম। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুক একাউন্টে লগইন করতে পারি।
কিন্তু সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক লগইন রিকভারি কোড ইউজ করা। ফেসবুক
রিকভারী কোড গুলি সহজে খুজে পেতে আপনি পরবর্তী পয়েন্টগুলি হুবহু অনুসরণ করুন,
- প্রথমে আপনার ফেসবুক একাউন্টের সেটিং এন্ড প্রাইভেসি থেকে সেটিং এ ক্লিক করুন।
- এরপর সিকিউরিটি এন্ড লগইন থেকে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন এর এডিট বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি প্রদান করুন।
- তারপর রিকভারি কোড থেকে সেট আপ এবং গেট কোডস এ চাপ দিন।
- আপনি যদি ইতোপূর্বেই রিকভারি কোড জেনারেট করে থাকেন তাহলে ম্যানেজ থেকে শো কোডস এ ক্লিক করুন।
আপনার ফেসবুকের রিকভারি কোডগুলি আপনার সামনে দৃশ্যমান হবে। কোডগুলিকে আপনি
সুরক্ষিত কোন জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখুন এবং পরবর্তীতে যখনই আপনার ফেসবুকে
লগইন করতে কোন সমস্যা হবে আপনি এই কোডগুলি ব্যাবহার করতে পারেন।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কেন গুরুত্বপূর্ণ
বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম আমাদের অধিকাংশ মানুষের জীবনের সাথে
ওতপ্রোথভাবে জড়িত। আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোকও আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া
নিজের জীবনকে কল্পনাও করতে পারেন না। একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে একজন
ইউজারের ব্যক্তিগত জীবনের অনেক তথ্য সংগ্রহীত থাকে। যেগুলো বেহাত হয়ে গেলে
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর জীবনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও যারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা করে থাকেন, যেমন
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যারা ফেসবুকে বা ইউটিউব এ ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেন
তাদের একাউন্টগুলি যদি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে তাদের তিলে তিলে তৈরি করা ফেসবুক
প্রোফাইল, পেজ বা ইউটিউব চ্যানেল মুহূর্তের মধ্যেই অন্যের হাতে চলে যেতে পারে।
যার ফলে একজন মানুষের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এই সমস্ত ক্ষতি বা হ্যাকিংয়ের হাত থেকে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট রক্ষা
করার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কোন বিকল্প নেই। আবার কিছু কিছু এমন সোশ্যাল
মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলিকে আপনি টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ছাড়া
ব্যাবহারি করতে পারবেন না। এইজন্য আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম বা গুগল
একাউন্ট হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর
গুরুত্ব অপরিসীম।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন আমাদের বিভিন্ন একাউন্টে লগইনের ক্ষেত্রে আলাদা করে
সিকিউরিটি স্তর যোগ করে, যার ফলে হ্যাকারদের জন্য আমাদের একাউন্টের অ্যাক্সেস
পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। হ্যাকারেরা পাসওয়ার্ড কে হ্যাক করে ফেললেও
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হ্যাক করা তাদের দ্বারা সম্ভব হয় না। যার ফলে আমাদের
অ্যাকাউন্ট অনেক সুরক্ষিত থাকে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ইমেইল, এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে টু-ফ্যাক্টর
অথেন্টিকেশন ব্যবহার করলে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা যায়। এমনকি পাসওয়ার্ড
ভুলে গেলে বা পাসওয়ার্ড কোন কারনে লিক হয়ে গেলেও, ব্যবহারকারী খুব সহজেই তার
অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করতে পারে। এছাড়াও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন অপরিহার্য একটি বিষয়,
কারণ এর মাধ্যমে একটি পুরো সংস্থার সুরক্ষিত তথ্য লিক হওয়া থেকে রোধ করা যায়।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করলে আমাদের সংবেদনশীল সব তথ্য নিরাপদ থাকে
এবং আমাদের একাউন্টের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়।
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কাদের ব্যাবহার করা উচিত নয়
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন আমাদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমাদের মধ্যে কিছু কিছু ব্যক্তির জন্য এটি ব্যবহার করা উচিত
নয়, কারণ এটি ব্যবহার করার মাধ্যমে তাদের উপকারের চাইতে ক্ষতির পরিমাণই বেশি
হতে পারে। যদি কেউ ইন্টারনেট ব্রাউজিং বা তথ্যপ্রযুক্তি তে দুর্বল হয়ে থাকে
তাহলে তার টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা উচিত নয়,
কারণ টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন আমাদেরকে দুই ধাপের সিকিউরিটি প্রদান করলেও এটি
ব্যবহারের পদ্ধতি কিছুটা কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ। এইজন্য যারা ইন্টারনেট
ব্রাউজিং বা তথ্যপ্রযুক্তিতে অত্যন্ত দুর্বল তাদের টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
ব্যবহার না করাই উত্তম। যদি তারা এটি ব্যবহার করেন তাহলে কর্মপদ্ধতি না বোঝার
কারণে ভুলক্রমে তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
এজন্য ভুলক্রমে অ্যাকাউন্ট ব্যান করা থেকে বিরত থাকতে তাদেরকে টু ফ্যাক্টর
অথেন্টিফিকেশন এড়িয়ে চলা উচিত। অপরদিকে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন যেহেতু দুই
ধাপে সংঘটিত হয়ে থাকে এই জন্য এটি সম্পাদন করতে কিছুটা বেশি ফাংশন এবং সময়ের
প্রয়োজন হয় এই জন্য যে ব্যক্তিদের ধৈর্য কম বা যারা কোন একাউন্টে লগইন করার
ক্ষেত্রে অতি দ্রুত লগইন করতে চান তাদের জন্য ২ ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার
না করাই উত্তম।
গুগল প্রম্পট এবং ফিজিক্যাল টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর পার্থক্য
গুগল প্রম্পট খুবই সাধারণ ও সহজ ভেরিফিকেশন মেথড ব্যবহার করে, যা শুধুমাত্র
হ্যাঁ বা না বাটন দ্বারাই হয়ে থাকে। আবার গুগল প্রম্পট ভেরিফিকেশন শুধুমাত্র
মোবাইল স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ থাকে যার ফলে বিভিন্ন ধরনের অথেন্টিকেশন অ্যাপ
ব্যবহার করার মাধ্যমে এই সিস্টেমটিকে বাইপাস করা যায়, যা ব্যবহারকারী এবং
অ্যাকাউন্টের মাঝে একটি সমস্যার সৃষ্টি করে, যা ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর
অথেন্টিকেশন সিস্টেমের ভিতরে থাকে না।
ফিজিক্যালি যখন আমরা কোন ডিভাইসকে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সিকিউরিটি কি হিসেবে
ব্যবহার করি তখন তা কোন সফটওয়্যার দ্বারা হ্যাক করা সম্ভব হয় না। তারপরেও
গুগল, ব্যবহারকারীর ব্লুটুথ এবং লোকেশন ইনফরমেশন যাচাই করে দেখে যে সে সত্যিই
ইউজার কিনা। এতসব সুবিধার জন্যই ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সিকিউরিটি
কি, অন্যান্য সকল সিকিউরিটি সিস্টেম থেকে ইউজারদের বেশি উপকারে আসে।
শেষ কথা
বর্তমান পৃথিবীতে যে ভয়ংকর গতিতে ইন্টারনেটের প্রসার ঘটছে, ঠিক তেমন গতিতেই
খারাপ ইন্টারনেট ইউজারদের প্রসার ঘটছে। যাদের সবসমইয়ের চেষ্টা থাকে শুধুমাত্র
অন্যদের ক্ষতি করার। এক্ষেত্রে ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন আপনার
একাউন্ট সুরক্ষিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ফিজিক্যাল টু ফ্যাক্টর অথেন্টিফিকেশন ব্যবহার করার মাধ্যমে ওয়েব ব্রাউজিং
আমাদের জন্য অনেকটাই নিরাপদ হয়ে যায়।
এতক্ষণ ধরে চেষ্টা করলাম আপনাদেরকে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে কীভাবে
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন তা সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দেওয়ার।
চেষ্টা করেছি আপনাদের সামনে অনেক সহজ ভাষায় সবকিছু উপস্থাপন করার। আশা করছি
উপরের সবকিছু মনোযোগ সহকারে পড়লেই আপনি খুব সহজে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
হিসেবে কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করবেন তা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
যদি আপনি এই ধরনের তথ্য মূলক বিভিন্ন আর্টিকেল পড়তে পছন্দ করে থাকেন এবং
নিয়মিত পড়তে চান, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন। এই সাইটে আমরা
নিয়মিত এই ধরনের তথ্য মূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি যা আপনাদের দৈনন্দিন
জীবনে অনেক কাজে সহায়তা করবে বলে আশা করছি।
ম্যাজিক টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url